
মেভটাইমস অনলাইন ডেস্কঃ- ঝিনাইদহের মৎস্য অফিসের অনিয়মই যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে, অফিসের মধ্যেই খাট পালঙ্ক, আলনা, ফ্রিজ।অফিস টাইমেই ঘুমিয়ে সময় পার করেন অফিস সহকারী। সরেজমিনে যে চিত্র দেখা মেলে তাকে অফিস না বলে অনেকটা আবাসিক হোটেল বলাই মানানসই।
অভিযোগ রয়েছে মৎস্য অফিসের হিসাব রক্ষক শওকত বিভিন্ন মানুষকে সরকারি চাকরি দেবার নামে প্রকাশ্যে প্রতারণা করে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। একজন হিসাব রক্ষক সরকারি চাকরি দেবার সিন্ডিকেটের সক্রিয় সদস্য হয়েও বহাল তবিয়তে লুটপাট করছেন সরকারি অর্থ।
মৎস্য অফিসের হিসাব রক্ষক শওকত এই পর্যন্ত প্রায় দশ থেকে বারো জনের কাছ থেকে সরকারি চাকরি দেবার প্রলোভন দেখিয়ে হাতিয়ে নিয়েছেন প্রায় কোটি টাকা,আর যারা চাকরির আশায় সর্বস্ব তুলে দেয় প্রতারক শওকতের হাতে তারা চাকরি না পেয়ে টাকা ফেরত চাইলেই শুরু হয় শওকতের বিভিন্ন টালবাহানা।
পাওনাদারের টাকা চাইলে শওকত স্থানীয় সন্ত্রাসীদের দিয়ে বিভিন্ন হুমকি ধামকি দিয়ে থাকেন। এই প্রতারক শওকতের নামে এই পর্যন্ত ঝিনাইদহ সদর থানায় দুই তিনটা লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী জনগণ।
শওকতের বিষয়ে সরজমিনে ঝিনাইদহ মৎস্য অফিসে উপস্থিত হয়ে দেখা যায় আরও ভয়াবহ চিত্র,পর পর তিন দিন অফিসে যেয়ে কোনই কর্মকর্তা কর্মচারীকে পাওয়া যায়নি।
অফিসের হাজিরা খাতায় গত তিন দিন শওকতের কোনো সিগনেচার নেই।সেই সাথে উপস্থিত নেই মহিলা অফিস সহায়ক শামীমা আক্তার। তার বিষয়ে জানতে চাইলে জানা যায় তিনারা স্বামী স্ত্রী দুইজনই এই অফিসে চাকরি করেন,তার স্বামী প্রধান অফিস সহকারী মোঃ ইউনুছ আলী এসে জানান অসুস্থ তাই ছুটিতে রয়েছেন। কিন্তু ছুটির জন্যে কি কোনো দরখাস্ত করেছেন...? জানতে চাইলে বলেন আমাদের ছুটির জন্যে এসব লাগে না, স্যারকে বললেই হয়। অবশ্যই এই ছুটিতে থাকার বিষয়টি জানেন না মৎস্য কর্মকর্তা জনাব, ফরিদুর রেজা নিজেই।
তিনি বলেন কেউই ছুটিতে নেই তারা অফিসেই আছে।
ঝিনাইদহ মৎস্য অফিসের এই চরম অনিয়ম দুর্নীতির বিষয়ে কথা হয় জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জনাব,ফরাদুর রেজার সাথে। তিনি জানান আমার অফিসে ছুটি নিতে হলে লিভ এপ্লিকেশন অবশ্যই দেওয়া লাগবে,আর শওকত বা অফিস সহায়ক শামীমা আক্তার কেউই ছুটিতে নেই, হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর বা অফিসে কেনো তারা নেই সেই বিষয় আমি কিছুই জানিনা।
এছাড়া প্রতারক শওকতের বিষয়ে তিনি বলেন, আমি নিউজের মাধ্যমে জানতে পারলাম শওকত এই ধরনের প্রতারণার সাথে জড়িত তবে আপনারা লিখিত অভিযোগ করলে যথাযথ আইনি ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে ভুক্তভোগী জনগণ শওকতের প্রতারণার স্বীকার হয়ে হারিয়েছেন সবকিছু, তাদের দাবি এই অসৎ ঘুষখোর শওকতকে অনতিবিলম্বে চাকরিচ্যুত করে আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হোক।
সরকারি চাকরি মানেই যে সোনার হরিণ, তা সরাসরি উপলব্ধি করতে হলে চলে আসুন ঝিনাইদহ মৎস্য অফিসে। অফিসের মধ্যে খাট পালঙ্ক, আলনা ফ্রিজ অনেকটাই আবাসিক হোটেলের আদলে এছাড়াও দিনের পর দিন অফিসে না আসলেও কোনোই জবাবদিহিতা নেই, এ যেনো সেই মগের মুল্লুক, চাকরি করি সরকারি অফিস করার কি এত দরকারী।
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি